ঢাকা, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা, সাবেক এমপি আজাদসহ আসামি ৪৯ 

  গোবিন্দগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:৫২  
আপডেট :
 ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:৫৭

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা, সাবেক এমপি আজাদসহ আসামি ৪৯ 
সাবেক এমপি অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে গাইবান্ধা-৪ আসনের (গোবিন্দগঞ্জ) সাবেক এমপি অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ.ফ.ম. আছাদুজ্জামান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী মো. মামুন খান (২৭) গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামুন গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বুজরুক বোয়ালিয়া হীরকপাড়া গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে। গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমানকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন- গাইবান্ধা-৪ আসনের সাবেক এমপি অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ (৬৮), উপজেলা পরিষদের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুল (৪০), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান আতাউর রহমান বাবলু (৬২), সাবেক মেয়র মুকিতুর রহমান রাফি (৪৫), উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিয়া আসাদুজ্জামান হিরু (৪৫), উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ফরহাদ আকন্দ (৩৪), পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শাহিন আকন্দ (৫০), কামারদহ ইউপি চেয়ারম্যান তৌকির হাসান রচি (৩৭), ইউপি সদস্য মিন্টু মিয়া (৪০), উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাদ্দাম হোসেন (৩২), যুগ্ম আহ্বায়ক বাবুল ইসলাম (২৯), পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম মাবিয়ার (৩৪), জাহিদ ইসলাম (৩৫), উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসানুল শেখ সুমন (৩৪), পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রেজা (৩৩), রাফসান জানি স্বর্নাভ (৩৩), উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য মাজেদুল ইসলাম মাহিন (২২), ওয়ালিদ হাসান (২৭), উপজেলা শেখ রাসেল শিশু-কিশোর পরিষদের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ (৩২), সাগর ইসলাম (২৯), উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য মুন্না খন্দকার (২৯), জীবন মন্ডল (৪২), তালুককানুপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লিখন সরকার (২৮), নাকাই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শাওন আল শাদ (২৬), রাখালবুরুজ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফাইয়াজ আনাম শাফিন (২৬)।

আর আসামি হলেন- পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান (৩২), আতিকুর রহমান (৩৪), রাকিবুল ইসলাম রাকিব (২৬), সালমান (২৮), উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য রওশন আলী সনি (৩০), কমেট (৪৫), রুয়েল মন্ডল (৩৬), দিলীপ মন্ডল (৩৫), ছাত্রলীগ নেতা নুর আলম নুরু (২৮), পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মুন্নু রহমান মুন্না (৩২), কাটাবাড়ি ইউপি ১নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি মালেক দেওয়ান (২২), চাঁদ মিয়া (৪০), সামিউল আলিম (৩২), সাবেক মেয়রের পিএস পাপ্পু আকন্দ (২৭), রাকিবুল ইসলাম পলাশ (৩৫), রাখালবুরুজ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক খালেক মাহমুদ সুজন (২৫), সজল মহন্ত (৩০), রাহেল (২৩), রঞ্জু মিয়া (৪৫), খালেক (২৬), শিবপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান আপেল (২৮), শাখাহার ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রনি (২৪) ও ইউনুস আলী (৪২), গাজীয়ার রহমান (৩৫)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বাদী মামুন খান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। সারা দেশের মতো গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জেও কোটা সংস্কার আন্দোলনের ডাকে আন্দোলনকারীরা একত্রিত হয়েছিলেন। গত ১৭ জুলাই বিকেল ৪টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার সাফিয়া আছাব বিপিএড কলেজ মাঠ থেকে প্রায় ৭০০-৮০০ জন শিক্ষার্থী ও জনতা একটি প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে শহরের ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় হামলার ঘটনা ঘটে। রাজমতি সুপার মার্কেটের সামনে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আসামিরা লাঠি, লোহার রড, দেশীয় অস্ত্র, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, হকিস্টিক, এবং ইট-পাথর নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়।

সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের নির্দেশে এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুলের নেতৃত্বে আসামিরা হামলা করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ সময় মামুন খান, বাঁধন, ওয়ারিদ, শ্রাবণ, আকাশ, ওমর ফারুক, আবিদ হোসেন, ইজাজসহ ২০-২৫ জনকে আঘাত করা হয়। হামলায় ৪০-৪২ জন আন্দোলনকারী গুরুতর আহত হন। আসামিরা আন্দোলনকারীদের থেকে কয়েকটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং তাদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়।

গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ.ফ.ম. আছাদুজ্জামান জানান, একজন শিক্ষার্থী বাদী হয়ে ৪৯ জনের নাম উল্লেখ এবং ১৫০-২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেছেন। মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে (মামলা নং ৭/৩৬১, তারিখ ৩/১০/২০২৪)। তবে আসামিরা কেউই এলাকায় নেই। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান ওসি আ.ফ.ম. আছাদুজ্জামান।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত